অং সান সুচির নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকে মিয়ানমারে সহিংসতা চালাচ্ছে দেশটির সেনাবাহিনী। যার সবশেষ ফলাফল, উত্তর-মধ্য মায়ানমারের একটি স্কুলে হেলিকপ্টার হামলা চালিয়ে ৭ শিশুসহ ১৩ জনকে হত্যা করেছে দেশটির সেনাবাহিনী। এছাড়াও আহত হয়েছে অন্তত ১৭ জন।
ঘটনাটি গত শুক্রবার সেন্ট্রাল সাগাইং অঞ্চলের লেট ইয়েট গ্রামের।সোমবার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, মিয়ানমারের একটি স্কুল ও একটি গ্রামে সরকারি হেলিকপ্টার হামলা চালিয়ে অন্তত ৭ শিশুসহ এক ডজনেরও বেশি লোককে হত্যা করেছে দেশটির সেনাসদস্যরা।
সামরিক বাহিনীর দাবি, ‘গুলি চালানোর কারণ, বিদ্রোহীরা সরকারি বাহিনীকে আক্রমণ করার জন্য এই ভবনটি ব্যবহার করছিল।
স্কুল প্রশাসক সংবাদ সংস্থা এপিকে জানিয়েছে, ‘সরকারি এমআই-৩৫ গানশিপ যখন স্কুলে গুলি চালায় তখন তিনি শিশুদের নিরাপত্তার জন্য চেষ্টা করছিলেন। যেহেতু ছাত্ররা কোনো ভুল করেনি, আমি কখনো ভাবিনি যে তাদের মেশিনগান দিয়ে নির্মমভাবে গুলি করা হবে। তারা এক ঘণ্টা ধরে আকাশ থেকে কম্পাউন্ডে গুলি চালিয়েছে। তারা এক মিনিটের জন্যও থামেনি। তখন আমরা যা করতে পারতাম তা হল বৌদ্ধ মন্ত্র উচ্চারণ করা। ’
রাষ্ট্রীয় মিডিয়া আউটলেটগুলি পরের দিন হামলার বিষয়ে দাবি করে, সরকারী বাহিনী একটি ‘আশ্চর্য পরিদর্শন’ করতে গ্রামে গিয়েছিল। তাদের কাছে রিপোর্ট ছিল পিপলস ডিফেন্স ফোর্স (পিডিএফ)-এর সদস্য এবং কাচিন ইন্ডিপেনডেন্স আর্মি (কেআইএ) এর সহযোগীরা স্কুল সংলগ্ন মঠে লুকিয়ে ছিল। ক্ষমতাসীন মিয়ানমার জান্তা সরকার তাদের ‘‘সন্ত্রাসী’’ বাহিনী বলেই মনে করে। তাদের দাবি, পরিদর্শনে গেলে এই দুই সন্ত্রাসী বাহিনী তাদের সরকারি নিরাপত্তা বাহিনীর উপর গুলি চালায়।
বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করলেও সরকার হতাহতের ঘটনাকে অস্বীকার করেছেন। তাদের দাবি, পিডিএফ এবং কেআইএ গ্রামবাসীদের মানব ঢাল হিসাবে ব্যবহার করেছে। এটি শিশুদের মৃত্যুর বিষয়ে কোনো কিছু উল্লেখ করেনি।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে একটি নির্বাচিত সরকারের কাছ থেকে সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখলের পর থেকে মিয়ানমার জুড়ে সহিংসতা একটি সাধারণ ঘটনা। বিরোধী আন্দোলন করতে দেশ জুড়ে কিছু সশস্ত্র বাহিনী আবির্ভূত হয়েছে। যারা সামরিক বাহিনীর প্রাণঘাতী আগ্রাসনের সাথে মোকাবিলা করার চেষ্টা করছে।